সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স: প্রতারণা ও হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে বরিশালের আইনজীবী শহীদ হোসেনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নগরীর পোর্ট রোড এলাকার ব্যবসায়ী শান্তি রঞ্জন দাস।
২১ আগষ্ট (সোমবার) বেলা সাড়ে বারো টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) বীর মুক্তিযোদ্ধা-শহীদ জননী সাহান আরা বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শান্তি রঞ্জন দাস এর লিখিত বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে, দীর্ঘ ৩৫ বছর পোর্ট রোডে ব্যবসা করে আসছি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জমি ছিলো সরকারি। জেল নং ৪৯, মৌজা বরিশাল সদর, দাগ নং ৭০৫/৯০৪। উক্ত দাগের ৩.৯ শতাংশ অকৃষি খাস জমি দখল সূত্রে আমি ভোগ দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলাম।
আমার দখলকৃত জমি ইউসুফ মিয়া তার ছেলে শাহাদাত হোসেন ছৈয়ালের নামে গত ১৬/১০/১৯৯৬ তারিখ ডিসি অফিস থেকে বন্দোবস্ত নেয়। আমি পূর্বের দখল থাকা স্বত্বে তারা বন্দোবস্ত নিলেও দখল বুঝিয়া পায়নি। ২০০৫ সালে আইনজীবী শহিদ হোসেন আমার কাছে আসে। আমার দখল কৃত জমি আমার নামে ডিসি অফিস থেকে বন্দোবস্ত এনে দিবেন বলেন।
বিভিন্ন সময়ে বন্দোবস্তু গ্রহীতা জমি দখল নিতে আসলে আমাকে দিয়ে শহিদ হোসেন প্রতিপক্ষ শাহাদাত হোসেন ছৈয়াল এবং তার ভগ্নীপতি বাবুল খানকে নানা ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করান। অন্তত তাদের বিরুদ্ধে দোকান লুট, নারী নির্যাতন, মন্দির ভাঙা, মাদকসহ নয়টি মিথ্যা মামলা দিয়েছেন আমাকে দিয়ে। আমার নামে জমি বন্দোবস্ত না করে শহিদ হোসেন ২০১২ সালে প্রতিপক্ষ শাহাদাত হোসেন ছৈয়ালের কাছ থেকে কৌশলে অবৈধ ভাবে সাব-কবলা দলিল মূল্যে জমি লিখে নেন।
কিন্তু সরকারি খাস জমি ডিসি অফিসের অনুমতি ছাড়া এভাবে লিখে নেওয়ার নিয়ম নেই। তার এমন কর্মকান্ডে আমি হতাশ হই। তিনি আমার নামে জমি বন্দোবস্ত না করে তার নামে জমি কেন লিখে নিছেন প্রতিবাদ করার তিনি আমাকে উক্ত জায়গায় সামনের দিকে ১০/১২ ফুটের একটা দোকানঘর লিখে দেওয়া এবং নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বিসমিল্লাহ সুপার মার্কেটের পিছনে তার ব্যবহৃত একটা দোকানে দীর্ঘ ১২ বছর কোন রকম ব্যবসা করে কষ্টে জীবন যাপন করতেছি।
এ সময়ে তিনি আমাকে দিয়ে তার সকল ব্যক্তিগত কাজ করাতেন। তার কাছে আমি অসহায় হয়ে পড়ি। আমি শেষ বয়সে চলে আসছি চোখে দেখি না কাজ করতে কষ্ট হয়। আইনজীবী শহিদ হোসেন দেওয়া প্রতিশ্রুতি ছাড়া আমার আর কিছু নেই। গত ১১/০৮/২০২৩ তারিখ শহিদ হোসেনের কাছে বলি, আমার তো বয়স শেষ কবে মারা যাই ঠিক নেই। আমার দোকানঘর ও পাঁচ লক্ষ টাকা বুঝিয়া দেন দয়া করে। বুঝিয়া চাইতে গেলে তিনি আমাকে কোন প্রতিত্তোর না দিয়ে আমার উপর হামলা চালান কিল, ঘুষি দিয়ে আমাকে জখম করেন।
হিন্দু মেরে ফেলবো, দেশে রাখবো না উল্লেখ করে আমাকে হত্যার হুমকি প্রদান করেন। তিনি বলেন আমাকে কোন দোকান বা টাকা দিবেন না। এদেশে হিন্দুদের কোন স্থান নেই। আমাকে গালিগালাজ করে মার্কেট থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দেন এবং কোনদিন মার্কেটে যেতে নিষেধ করেন। মার্কেটের কাছে গেলে তিনি আমাকে মেরে ফেলবেন। বলেন। তার হত্যার হুমকির কারণে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। আমি নিরাপত্তার জন্য কোতোয়ালি মডেল থানায় গত ১১/০৮/২০২৩ তারিখ একটা সাধারণ ডায়েরি দায়ের করি। ডায়েরি নং ৬৭৫।
আমি শহিদ হোসেনের কাছ থেকে প্রতারণার স্বীকার হয়ে আজ জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে পথে বসে গেছি। আমার মৃত্যু ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আমি একজন ভূমিহীন। বাংলাদেশের কোথায়ও আমার কাছে জমি নেই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার মা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রতারক শহিদ হোসেনের বিচারের দাবী জানাচ্ছি।
তিনি যোনো আমার শেষ সম্বলটুকু ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে কয়েকজনে আইনজীবী শহীদ হোসেনের কাছে উপরোক্ত বিষয়ের বর্ণনা তুলে ধরলে সবকিছু ষড়যন্ত্র বলে জানান।